কীভাবে বুঝবেন আপনি মানুষ হিসাবে বেশি সুবিধার নন
আপলোড সময় :
২৫-১০-২০২৪ ০৬:১০:৪৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৫-১০-২০২৪ ০৬:২৬:২২ অপরাহ্ন
আমাদের সবসময় মনে হয় আমরাই ঠিক। অথবা আমাদের সঙ্গে সবাই সবসময় অন্যায় করছে, অন্যদেরই দোষ ইত্যাদি। কিন্তু নিজের ভালো দিক আর নিজের প্রতি অন্যদের খারাপ আচরণের পাশাপাশি নিজেদের দোষগুলো কিন্তু আমাদের চোখেই পড়ে না। নিজের কাছে আপনি সবসময় একজন ভালো মানুষ। তবে মনোবিজ্ঞানের মতে, কিছু আচরণ রয়েছে যা প্রমাণ করে, আপনি নিজেকে যতটা ভালো ভাবেন, ততটা ভালো আপনি নন। আত্মসমালোচনা আত্মশুদ্ধির প্রথম ধাপ। আর নিজেকে সংশোধন করতে পারাটাই আসলে প্রকৃত ভালো মানুষের লক্ষণ। তাই নিজেই মিলিয়ে নিন এই বৈশিষ্ট্যগুলো
১. আপনার মাঝে এমপ্যাথি বলে কিছু নেই
মানুষের প্রতি ন্যুনতম সহানুভূতির অভাব কিন্তু বলে দেয়, আপনি নেই ভালো মানুষের কাতারে। কারো ভালো-মন্দ বা সুখে-দুঃখে আপনার যদি কিছু না যায় আসে, তাহলে আপনার মাঝে এমপ্যাথি বলে কিছু নেই।
খুব কাছের মানুষগুলোর আনন্দ কিংবা কষ্ট আপনাকে স্পর্শ না করে,তবে এবার আপনাকে ভাবতে হবে নিজেকে নিয়ে, বদলাতে হবে এই বৈশিষ্ট্যকে। মনোবিজ্ঞানের মতে, একজন ভালো মানুষ না হওয়ার প্রধান লক্ষণ হল এই এমপ্যাথির অভাব।
২. ঘন ঘন মিথ্যা বলেন আপনি
হরহামেশা মিথ্যা বলা অবশ্যই ভালো না। ছোট খাটো মিথ্যা বলাটাকেও বর্জন করা উচিত। এরপরও অতি প্রয়োজনে মিথ্যা কেউ বলেই না এমনও নয়, তবে ঘন ঘন এবং অপ্রয়োজনীয় মিথ্যা বলা ভিন্ন ব্যাপার। একারণে বিশ্বস্ততা হারিয়ে সম্পর্কগুলো নষ্ট হয়ে যায়। আপনি প্রায়ই এত মিথ্যা কথা বলেন, যা আপনার মিথ্যা মনে হয় না। হয়তো ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে বলে অফিসে পৌছাতে পারেন নি। কিন্তু বললেন জ্যামে আটকা পড়েছেন! আপাতদৃষ্টিতে মনে হতেই পারে, এ আর এমন কী? কিন্তু এমন হতে দিতে থাকলে মিথ্যা বলাটা অভ্যাসে পরিণত হবে। আপনার প্রতি সবাই বিশ্বাস ও আস্থা হারাবে।
৩. আপনার অতিরিক্ত সমালোচনা করার অভ্যাস আছে
পরিমিত মাত্রায় সমালোচনা ব্যক্তিগত উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য সহায়ক হতে পারে। তবে যখন সমালোচনা অতিরিক্ত ও ক্রমাগত হয়ে যায়, তখন এটি সমস্যার কারণও বটে। এতে আপনার ভাবনা চিন্তা নেতিবাচক হয়ে যায়। অতিমাত্রায় সমালোচক ব্যক্তিরা সবকিছুতে দোষ খোঁজেন। এই আচরণটি আশেপাশের মানুষদের জন্য বিব্রতকর বলে সম্পর্কে টানাপোড়ন লেগে থাকে। যদি আপনি সবসময় অন্যদের সমালোচনা করেন, তবে সময় এসেছে আরও ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করার, ভাবনা চিন্তাকে পরিবর্তন করার।
৪. দেওয়া-নেওয়ার ভারসাম্য নেই আপনার আচরণে
ব্যক্তিগত জীবন হোক বা কর্মক্ষেত্র, ভারসাম্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে যে কোনো সম্পর্ক। যদি আপনি বেশি নেন এবং কম দেন, তবে সম্পর্কের ভারসাম্য হারায়। যতক্ষণ না এই সমতা আসছে, নিজেকে ভালো মানুষ দাবি করবেন কি করে?
৫. আপনি জানেন না কোথায় বা কখন থামতে হবে
সকলের সব বিষয়ে কথা বলা আমাদের স্বভাব। কার বিয়ে হলো, কার সংসার ভাঙল, কে বেকার বা কার পরিবারে কি চলছে, এসব নিয়ে আমরা যতটা উদ্বিগ্ন নিজেকে নিয়েও এত ভাবনা আমাদের নেই! অন্যদের কোন কোন বিষয়ে কথা বলার অধিকার আপনার আছে, সেটা জানাও ভালো মানুষের লক্ষণ। আপনি যদি নিয়মিত আপনার সীমা ছাড়িয়ে সকল বিষয়ে অনধিকার চর্চা করেন তবে শুধু ব্যক্তিত্বই হারাবে না, আপনাকে এড়িয়ে চলা মানুষের তালিকাটাও দীর্ঘ হবে। তাই আপনার সীমানাটা নির্ধারণ করুন।
৬. সবসময় ভিকটিম সাজেন আপনি
জীবনে চলার পথে হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। তাই বলে কি সকল সমস্যার ভুক্তভোগী আপনিই? আর যত দোষ আশে পাশের মানুষগুলোর? সবসময় নিজেকে ভিকটিম আর অন্যকে দোষী হিসেবে উপস্থাপন করা ভালো মানুষের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। অন্যকে দোষারোপ করার আগে ঘটনার বিশ্লেষণ করুন। নিজেকে সাধু প্রমাণ করার আগে নিজের দোষটা নিয়েও ভাবুন।
৭. আত্মসচেতনতার অভাব আছে আপনার
নিজের আচরণের প্রভাব না বুঝতে পারা কিংবা নিজের দুর্বলতাগুলি না চিনতে পারা হলো একজন ভালো মানুষ না হওয়ার সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ। আমি যা বলছি তাই ঠিক এ ধরণের মানসিকতা থাকলে আপনি ভালো মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবেন না। মানুষের সীমাবদ্ধতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আর নিজের ব্যাপারে অন্যের মতামতকে সম্মান ও গুরুত্ব দেয়াটাও একজন ভালো মানুষের বিশেষ গুণ।
যদি আপনি সত্যিকার অর্থে একজন ভালো মানুষ হতে চান, তবে আত্মসচেতনতা দিয়ে শুরু করুন, ধীরে ধীরে আয়ত্ব করুণ প্রতিটি গুণ। আত্মবিশ্লেষণ করে নিজেকে পরিবর্তন করা লজ্জার নয় বরং এটি জীবনের সর্বক্ষেত্রে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে। সূত্র: থট ক্যাটালগ।
বাংলা স্কুপ/ডেস্ক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স